শনিবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়বলেন, ‘‘ নির্বাচনের সময় যতখুশি রাজনীতি করুন। কিন্তু এই বিপর্যয়ের সময় ক্ষান্ত দিন। এই পরিস্থিতিতে দয়া করে ক্ষুদ্র রাজনীতি করবেন না।’’ আমপান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এ দিন ২০০৯-এর আয়লার প্রসঙ্গও টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘দুর্যোগ যখন আসে সহ্য করতে হয়। ধৈর্য ধরতে হয়। আয়লার সময় আমি কিন্তু সমালোচনা করিনি। নোটবন্দি, ঘরবন্দি সবসময় সহযোগিতা করে এসেছি। মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করবেন না। এটা রাজনীতি করার সময় নয়।’’

 

প্রসঙ্গত, আমফানের ধাক্কা সামলাতে এ বার সেনার সাহায্য নিল রাজ্য সরকার। সেনার সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলে শনিবার স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে টুইট করে জানানো হয়। রাজ্য সরকারের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তড়িঘড়ি কাজে নামে ভারতীয় সেনাবাহিনী। আমপান-বিধ্বস্ত কলকাতায় ইতিধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন সেনা জওয়ানরা। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সেনা জওয়ানরা রাস্তা থেকে গাছ সরিয়ে পরিকাঠামো পুনরুদ্ধারের কাজ করছেন। সেনার পাশাপাশি রেল ও বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও সাহায্য চাওয়া হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র দফতর জানায়। সেই সঙ্গে বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে, শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিমান কলকাতা বিমানবন্দরে নামে। তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সওয়া ১১টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী রওনা দেন আমপান-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের জন্য। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী। দুই ২৪ পরগনার দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে এ দিন কিন্তু অনেকটা সময় ব্যয় করেছেন মোদী। তাঁকে নিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনার কপ্টার একটানা প্রায় ঘণ্টা দেড়েক উড়েছে সুন্দরবন আর আবাদ অঞ্চলের আকাশে। পরে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা, বাসন্তী, গোসাবা, কুলতলি, ভাঙড়-সহ বিভিন্ন এলাকা এবং উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট, মিনাখাঁ, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, হাসনাবাদ, বসিরহাট আকাশপথে ঘুরে দেখেছেন মোদী। বসিরহাট কলেজে হওয়া প্রশাসনিক বৈঠকও খুব সংক্ষিপ্ত ছিল না। একপাশে মুখ্যমন্ত্রী এবং আর এক পাশে রাজ্যপালকে নিয়ে মিনিট চল্লিশেক রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে মুখোমুখি আলেচনা সারেন প্রধানমন্ত্রী। তার পরে জানান যে, এই ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার জন্য পশ্চিমবঙ্গকে আপাতত ১ হাজার কোটি টাকার ‘অগ্রিম সহায়তা’ দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘এখন যাতে রাজ্য সরকারের অসুবিধা না হয়, তার জন্য অগ্রিম সহায়তা হিসেবে ১ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে।’’ এ ছাড়া আমপানে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দেওয়া হবে বলেও মোদী ঘোষণা করেন।

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: