চারজন থেকে কমে এখন স্পেশাল নিরাপত্তা গ্রুপের আওতায় এসে ঠেকেছেন শুধুমাত্র নরেন্দ্র মোদী। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে যেখানে চার জনের এসপিজি নিরাপত্তার জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছিল ৫৪০.১৬ কোটি টাকা, এ বার এক জনের জন্যই সেই বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে ৫৯২.৫৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ চার জনের জন্য যা বরাদ্দ ছিল, এক জনের জন্য তার চেয়ে বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া হল ১০ শতাংশ বেশি! স্বাভাবিক ভাবেই এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

গত বছরই সংসদে আইন সংশোধন করে সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর এসপিজি নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন এসপিজি নিরাপত্তা পান শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, এসপিজি নিরাপত্তার আওতায় ব্যক্তির সংখ্যা কমে চার থেকে এক হয়েছে। সেই হিসেবে বাজেট বরাদ্দ চার ভাগের এক ভাগ না হলেও অনেক কম হওয়া উচিত। উল্টে ১০ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হল? তাঁরা অঙ্ক কষে বুঝিয়েছেন, ২০১৯ সালে বাজেটে বরাদ্দ ৫৪০.১২ কোটির হিসেব ধরলে মাথাপিছু খরচ দাঁড়ায় ১৩৫ কোটি। সেটা মাথায় রাখলে বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে ৩৪০ শতাংশ!

আর এই হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর এসপিজি নিরাপত্তার জন্য প্রতি দিনের খরচ ১ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ ঘণ্টায় ৬ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বা মিনিটে ১১ হাজার টাকারও বেশি! এই হিসেব দেখে চোখ কপালে উঠেছে অনেকেরই।

 

মঙ্গলবার লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে ডিএমকে সাংসদ দয়ানিধি মারান জানতে চান, আইন সংশোধনের পরে বর্তমানে কত জন এসপিজি নিরাপত্তা পান এবং সিআরপিএফ কত জনকে নিরাপত্তা দেয়? তাঁরা কারা সেই প্রশ্নও সংসদে জানতে চান দয়ানিধি।

 

লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র  প্রতিমন্ত্রী জি কিষেন রেড্ডি সংসদে জানান, এসপিজি-র নিরাপত্তা পান শুধুমাত্র এক জন (তিনি প্রধানমন্ত্রী, তবে মন্ত্রী মোদীর নাম করেননি)। আর সিআরপিএফ-এর নিরাপত্তা পাওয়া ভিআইপি-র সংখ্যা ৫৬। তবে নিরাপত্তার কারণেই তাঁদের কারও নাম জানানো সম্ভব নয় বলেও জানান মন্ত্রী। যদিও এই সিআরপিএফ নিরাপত্তার আওতায় কারা থাকবেন, তার তালিকা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে মাঝে মধ্যেই পরিবর্তন করা হয় বলেও জানান মন্ত্রী।

১৯৮৪ সালে প্রাক্তন প্রধানমমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর হত্যার পরে বিশেষ কম্যান্ডো বাহিনী নিয়ে গঠিত হয় এসপিজি। অভিজাত এই কম্যান্ডো বাহিনীর উপর দায়িত্ব বর্তায় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার। ফলে রাজীব গাঁধী, সনিয়া গাঁধী এবং তাঁদের দুই সন্তান রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী স্বাভাবিক ভাবেই এসপিজি নিরাপত্তার আওতায় আসেন।

 

কিন্তু ১৯৮৯ সালে ভিপি সিংহ সরকার ক্ষমতায় আসার পর গাঁধী পরিবারের সদস্যদের এসপিজি নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়। এর পর ১৯৯১ সালে খুন হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। সেই বছরই কংগ্রেস ফের ক্ষমতায় আসে। প্রধানমন্ত্রী হন পি ভি নরসিংহ রাও। ফের সনিয়া গাঁধীর সুপারিশে গাঁধী পরিবারের সদস্যদের জন্য ফেরে এসপিজি নিরাপত্তা। তখন থেকে সেই রীতিই চলে আসছিল।

কিন্তু গত বছর সেই আইন সংশোধন করে মোদী সরকার। নতুন আইনে শুধু প্রধানমন্ত্রীই এসপিজি নিরাপত্তা পান। তুলে নেওয়া হয় গাঁধী পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা। পরিবর্তে তাঁদের নিরাপত্তায় বরাদ্দ হয় সিআরপিএফ।

 

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: