বউবাজারের ফুটপাথে একটি চায়ের দোকান ছিল সরস্বতী দাসের ভরসা। কিন্তু মেট্রো বিপর্যয়ের ফলে তাও লাটে উঠেছে। সল্টলেকে একটি বেরকারি সংস্থায় কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল সরস্বতীর ছেলে সঞ্জীবের। হঠাৎ বিপর্যয়ের ফলে তাঁর আর কাজে যোগ দেওয়া হয়নি। সরস্বতীর মেয়ে সুমিতা বসাক বাপেরবাড়িতে থাকেন। সেলাইয়ের কাজ করতেন বাড়িতেই। সেটাও বন্ধ। গত রবিবার থেকে হোটেলেই রয়েছেন সরস্বতীরা।

সকাল বিকাল হোটেল থেকে খাবার দেওয়া হলেও সেই খাবার কেওই মুখে তুলতে পারছেন না সব কিছু হারিয়ে। সরস্বতীর কথায় “কত দিন এ ভাবে আমরা দিন কাটাব? একটা চায়ের দোকান ছিল সেটাও বন্ধ হয়ে গেল। ছেলেটা সবে কাজে যোগ দেবে কথা হয়েছিল, তাতেও বাধা। মেয়েটাকে সেলাই মেশিন কিনে দিয়েছি। ও সেলাইয়ের কাজ করছিল, তা-ও বন্ধ হয়ে গেলে। এ ভাবে কী সংসার চলে?”

চাঁদনি চকের কাছে একটি হোটেলে সরস্বতীদের থাকার বন্দোবস্ত করেছে কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)। হোটেলের দরজা ঠেলে ঢুকতেই দেখা গেল সুমিতা তাঁর বছর দেড়েকের ছেলেকে মেঝেয় বসে খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন। সুমিতার মোবাইলটা ছেলের হাতে। পরিচয় জানার পর আগন্তুকের উদ্দেশে তিনি বলতে লাগলেন, “দাদা বলুন তো হোটেলের এই খাবার ছেলেকে খাওয়ানো যায়! কত বার বলছি, ঝাল কম দিয়ে খাবারটা দিন। শুনছেন না। আমরা কোনও রকমে খেয়ে নিচ্ছি। কিন্তু এই বাচ্চাটা কী করে খাবেন বলুন তো? ঘর-বাড়ি কাজ হারিয়ে সোনা খাঁচায় রয়েছি, ছেলেটার মুখে ভাত তুলে দিতে পারছি না।” 

 কেএমআরসিএল ওই এলাকায় বিপর্যয় মোকাবিলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্য দিকে, গোয়েন্‌কা কলেজে অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমে পুলিশ, মেট্রো, পুরসভা এবং প্রশাসনিক কর্তারা বৈঠকও করছেন। কত জন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার রয়েছে, তার একটি তালিকা তৈরিরও কাজ চলছে। কেএমআরসিএল সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭৫টি পরিবারের তালিকা তৈরি করা গিয়েছে। এই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। মেট্রো চাইছে, সোমবার থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা পরিবারের হাতে তুলে দিতে।


మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: