পঞ্চসায়ার কাণ্ডে তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই পোশাক নিয়ে ধন্দ বেড়েই চলেছে। বারবার বদলে যাচ্ছিল তার পোশাকের বিবরণ। এমনকি, একটি লাল গাউনের কথাও একাধিক বার উঠে এসেছে এ প্রসঙ্গে। কিন্তু পুলিশ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পঞ্চসায়রের হোম থেকে বেরোনোর সময়ে অভিযোগকারিণীর পরনে ছিল সাদাটে গাউন। তার উপরে ছিল সবুজ ছোপ। ঘটনার দিন অন্তত তিন বার পোশাক বদল হয় মহিলার।
লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত ওই জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে। সেখানে ঠিক কী ঘটেছিল, এখন সেটাই জানা প্রয়োজন। আমরা যে জায়গাটা চিহ্নিত করেছি, সেই জায়গাতেই ধৃত আমাদের নিয়ে গেলে সেখানকার আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে নতুন তথ্য পাওয়া যেতে পারে।’’
ওই পুলিশকর্তাই জানান, নরেন্দ্রপুর থানা মহিলাকে উদ্ধার করার পরে একটি হলুদ নাইটি পরতে দিয়েছিল। মহিলার পরনে থাকা সাদাটে রঙের গাউনটি ওই থানা বাজেয়াপ্ত করে। পরে নরেন্দ্রপুর থানা সেটি কলকাতা পুলিশকে দেয়।
কিন্তু নরেন্দ্রপুর থানা ওই মহিলাকে নতুন নাইটি পরাল কেন? লালবাজার সূত্রের খবর, মহিলার গাউনে রক্তের ছোপ লেগে ছিল। কোথা থেকে ওই রক্ত এল? লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলার নাক থেকে রক্ত ঝরছিল।
সেই রক্তই লেগেছিল গাউনের উপরের অংশে। ফরেন্সিক পরীক্ষায় সেই প্রমাণ মিলেছে। জেরায় ধৃত দাবি করেছে, মহিলার সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। তবে গাউনটি ছেঁড়া ছিল না বলেই জানান ওই পুলিশকর্তা।
নরেন্দ্রপুর থানা মহিলাকে সুভাষগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করায়। সেখান থেকে তাঁকে সোনারপুরের মালঞ্চ মোড়ে ভবঘুরেদের একটি সরকারি হোমে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানেও ফের পোশাক বদল হয় মহিলার। সোনারপুরের ওই হোম থেকে তাঁকে লাল রঙের একটি গাউন পরতে দেওয়া হয়েছিল বলে ওই হোমের কর্মীদের দাবি। লাল গাউন পরে নিজের হলুদ নাইটিটি একটি পলিথিন ব্যাগে নিয়ে মহিলা আত্মীয়ের বাড়িতে ফেরেন।
কিন্তু সোনারপুরের সরকারি হোমেও কেন ফের ওই মহিলার পোশাক বদল করতে হল? লালবাজার সূত্রের বক্তব্য, ‘‘সব কিছু এখনও পরিষ্কার নয়। এখনও আমরা সব প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পাইনি।’’
সোনারপুরের ওই সরকারি হোমের কর্মী অনিন্দিতা রায় দাবি করেছেন, ‘‘মহিলা একটি হলুদ নাইটি পরে আমাদের হোমে এসেছিলেন। সেই পোশাকের পিছনের দিকটা পুরো ছেঁড়া ছিল। সেই কারণেই একটি লাল গাউন ওঁকে পরতে দিই। মহিলা এ-ও বলেছিলেন, ওঁর অন্তর্বাস খুলে নেওয়া হয়েছে। হলুদ নাইটিটি মহিলা সঙ্গে রেখে দেন।’’ তাঁর দাবি, চোখের আড়াল হতেই ওই হলুদ নাইটি সঙ্গে নিয়ে কাউকে কিছু না বলেই সোনারপুরের হোম ছাড়েন মহিলা।
click and follow Indiaherald WhatsApp channel