সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণার ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই বিজেপি কর্ণাটক বিধানসভার উপনির্বাচনের জন্য প্রার্থীর নাম ঘোষণ করল । প্রার্থী তালিকায় দেখা যাচ্ছে অধিকাংশই দলছুট বিধায়কদের প্রার্থী করেছে বিজেপি । গত কাল বুধবার সতেরো জন বিধায়ককে উপনির্বাচনে লড়ার সম্মতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই কর্ণাটকের আসন্ন উপনির্বাচনে ১৩টি আসনে প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করল ভারতীয় জনতা পার্টি। আর সেখানেই দেখা যাচ্ছে ১৭জন বিধায়কের মধ্যে ১৩জন বিধায়ককে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী করেছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপির সদর দফতর দীন দয়াল উপাধ্যায় মার্গ থেকে বৃহস্পতিবার এই প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করেছে বিজেপি হাইকম্যান্ড। বরখাস্ত সতেরো জন কংগ্রেস এবং জেডিএস বিধায়কদের উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের সম্মতি গত বুধবারেই দিয়েছিল আদালত।
কর্ণাটকের আঠানি,কাগওয়ার,গোকাক,ইয়েল্লাপুর,হিরেকরুর,বিজয়ঙ্গুরু,চিক্কাবাল্লাপুরা-সহ মোট ১৩টি আসনে প্রার্থীপদ ঘোষণা করেছে বিজেপি। গত বুধবারই কর্ণাটকে ১৭ জন ‘বিদ্রোহী’ কংগ্রেস এবং জেডিএস বিধায়কদের উপনির্বাচনে লড়ার ক্ষেত্রে সবুজ সঙ্কেত দেয় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। তাৎপর্যপূর্ণভাবে তার ঠিক একদিন বাদেই উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীপদে নাম প্রকাশ করতেই দেখা যায় ওই তালিকায় রয়েছেন কংগ্রেস-জেডিএসের ১৩জন ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক! এই অভিনব কৌশলে বিস্মিত রাজনীতিক মহল।
চলতি বছরের জুলাই মাসে কর্ণাটক বিধানসভার স্পিকার কে আর রমেশ এই সতেরো জন বিধায়ককে ছয় বছরের জন্য নির্বাচন থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান বিধায়কেরা। সুপ্রিম কোর্টে এই বিষয়ে মামলা উঠলে রমেশের সিদ্ধান্তকেই মান্যতা দেয় এন ভি রমনা, সঞ্জীব খন্না এবং কৃষ্ণ মুরারির ডিভিশন বেঞ্চ। তবে সাময়িক স্বস্তি দিয়ে আগামী ৫ ডিসেম্বরের উপনির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট।
গত জুলাই মাসে স্পিকার কে আর রমেশ কংগ্রেস এবং জেডিএস-এর মোট সতেরো জন বিধায়ককে নিষিদ্ধ করেন। ফলে জুলাইয়ের আস্থা ভোটে অংশগ্রহণ করতে পারেননি তারা। শুধু তাই নয় ২০২৩ সাল পর্যন্ত কোনও ধরনের নির্বাচন থেকেও নিষিদ্ধ করা হয়। বুধবার এই বিষয়ে রায় দিতে গিয়ে তিন সদস্যের বেঞ্চ বলে, ‘সংবিধানের ১৯৩ ধারা এখানে আলোচিত হয়েছে। বিধানসভায় কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই পারেন স্পিকার। তিনি বিধায়কদের বরখাস্ত করতে পারেন। কিন্তু কতদিন পর্যন্ত তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না তা তিনি নির্ধারিত করতে পারেন না।’ স্পিকার পদ যেহেতু একটি সাংবিধানিক পদ তাই একে ‘কোয়াসি জুডিশিয়াল’ বা ‘আধা বিচারক’ পদ বলেও জানায় সুপ্রিম কোর্ট।
এই বিধায়কদের পদ খারিজ হতেই কর্ণাটকের ১৭টি সিটে উপনির্বাচনের পরিস্থিতি তৈরি হয়। তবে, ১৭টির মধ্যে ১৫টি আসনেই নির্বাচন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। কর্ণাটকের মাসকি এবং রাজরাজেশ্বরী আসনে সংক্রান্ত মামলা এখনও ঝুলে আছে কর্ণাটক হাইকোর্টে। যদিও সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন স্থগিতের আর্জিও জানিয়েছিলেন বিধায়করা।


Find out more: