আবারও ফিরল পুরনো স্মৃতি। তেইশ বছর আগে এমনই এক বিকেলে তিনি যখন কলকাতায় ফিরেছিলেন, স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল জনজীবন। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে শুরু করে ইডেন—তাঁকে এক ঝলক দেখার জন্য উদ্বেল ক্রিকেটভক্তেরা।
সৌরভের গাড়ি এসে দাঁড়াতেই আতসবাজির রোশনাইয়ে সিএবি যেন আরও রঙিন হয়ে উঠল। গাড়ি থেকে তিনি নামতেই পুষ্পবৃষ্টিতে ঢেকে গেল চারপাশ। লাল কার্পেটে স্বাগত জানানো হল নতুন বোর্ড প্রেসিডেন্টকে। প্রবল ভিড় ঠেলে সিএবির ভিতরে তাঁকে নিয়ে যেতে রীতিমতো নাজেহাল পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীরা। সিএবি আধিকারিকরা ফুলের তোড়ায় অভ্যর্থনা জানালেন তাঁকে। কেকও কাটলেন। কিন্তু দুই মুহূর্তকে মেলাতে পারলেন না সৌরভ। বললেন, ‘‘নিঃসন্দেহে এই যাত্রাটা খুবই সুখকর। খুব বড় একটা দায়িত্ব পেয়েছি। আশা করি, যত দিন সময় রয়েছে, তার মধ্যে প্রত্যাশামাফিক কাজ করতে পারব। তবে ১৯৯৬ সালের মুহূর্তটা আজকের চেয়ে তিরিশ গুণ বড়। জীবনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। ভারতের হয়ে প্রথম টেস্ট খেলার মতো সুখস্মৃতি আর কিছু হয় না।’’
২৩ অক্টোবর সরকারি ভাবে বোর্ড প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি কাজ শুরু করবেন। কিন্তু তার আগেই যেন তাঁর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, ‘‘ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব আর ক্রিকেট প্রশাসকের ভূমিকাটা সম্পূর্ণ দু’টো আলাদা ব্যাপার। অধিনায়ক হিসেবে চাপ, প্রত্যাশা, সমালোচনা ছিল অনেক বেশি তীব্র। গোটা ব্যাপারটাই ছিল মাঠের মধ্যে। আর এই দায়িত্বটা মাঠের বাইরের।’’
রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার যাবতীয় জল্পনাকে আবারও উড়িয়ে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের মন্তব্য, ‘‘আমি গতকাল অমিত শাহ-র টুইট দেখেছি। উনি নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যকে সম্মান করা উচিত।’’ যোগ করলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমি যখন দেখা করেছিলাম, তখনও এ ধরনের রাজনৈতিক প্রশ্ন উড়ে এসেছিল। কিন্তু তার পরের ফলাফলও সকলে দেখেছেন। এই প্রথমবার অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করলাম। সেই অভিজ্ঞতা অবশ্যই অন্য ধরনের। তবে আমি যেমন এক বারের জন্য প্রশ্ন করিনি বোর্ডে কোনও পদ পাব কি না, তেমনই অন্য কোনও ব্যাপার নিয়ে এমন কোনও কথাবার্তা হয়নি যার সঙ্গে রাজনীতির যোগ থাকতে পারে।’’ কিন্তু তার পরেও অনেকে মনে করছেন, যেখানে অমিত শাহর পুত্র জয় শাহ সচিব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন, তখন বোর্ডে প্রচ্ছন্ন রাজনৈতিক একটা প্রভাব থাকবেই। সৌরভের জবাব, ‘‘প্রথমত জয় শাহ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। আর প্রায়ই এটা শোনা যায় যে, বড় খেলোয়াড়ের ছেলে খেলতে পারে না আর বড় কোনও ব্যক্তিত্বের পুত্র ভাল প্রশাসক হতে পারে না। এটা সম্পূর্ণ একটা ভুল ধারণা।’’
click and follow Indiaherald WhatsApp channel