শনিবাসরীয় সন্ধ্যায় বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরভা স্টেডিয়ামে সাফ কাপের সেমিফাইনালে ভারত মুখোমুখি হবে লেবাননের যাদের বারো দিন আগে তারা আন্তঃ মহাদেশীয় কাপের ফাইনালে ২-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বেঙ্গালুরুর আবহাওয়া এখন বেশ মনোরম। সকাল-সন্ধ্যা বৃষ্টি হচ্ছে। স্টেডিয়ামে সুনীল ছেত্রীদের জন্য গলা ফাটাতে লোকও হচ্ছে প্রচুর। তাই পরিচিত পরিবেশে মাঠ ভরা সমর্থন নিয়েই ভারত নামবে সেমিফাইনালে। লেবানন এই টুর্নামেন্টের এক মাত্র টিম, যারা তিনটে ম্যাচেই জিতেছে। ভারতও জিততে পারত তিনটে ম্যাচ। কিন্তু কুয়েতের বিরুদ্ধে গ্রুপ লিগের ম্যাচে ভারত জিততে জিততেও ড্র করে ফেলে শেষ দিকে আনোয়ার আলির আত্মঘাতী গোলে। তবে এই গোলের জন্য তাঁকে কেউ দায়ী করেনি। ভারত অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী তো বলেইছেন, "আনোয়ার গোল খায়নি। গোল খেয়েছে ভারত।" অধিনায়কের কাছ থেকে এ রকম কথা শুনলে সংশ্লিষ্ট ফুটবলারের আত্নবিশ্বাস বেড়ে যেতে বাধ্য।

এমনিতে লেবানন ম্যাচে আনোয়ার আলির উপর বাড়তি দায়িত্ব পড়বে। কারণ ডিফেন্সের এক নম্বর প্লেয়ার সন্দেশ ঝিঙ্গন নেই। দুটো হলুদ কার্ড দেখায় সেমিফাইনালে তাঁকে মাঠের বাইরে থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে আনোয়ারের সঙ্গী কে হবেন ? মেহতাব সিং নাকি রাহুল বেকে ? ভারতের কোচ ইগর স্টিমাক শুক্রবার এই বিষয়ে কোনও ইঙ্গিত দেননি। তবে যেই খেলুন না কেন আনোয়ারকে বাড়তি দায়িত্ব নিতেই হবে। লেবাননের ফরোয়ার্ড লাইনে আছেন দুজন মারাত্মক ফুটবলার। লেফট উইংয়ে হাসান মাতুক এবং ফরোয়ার্ড আলি মাসকাবাওয়াই। ভারতের রাইট ব্যাক নিখিল পূজারীর দায়িত্ব হাসানকে রোখার, যিনি লেবাননের অধিনায়কও বটে। মালদ্বীপের বিরুদ্ধে গ্রুপের শেষ ম্যাচে গোলও করেছেন হাসান। তাঁর সঙ্গী ফরোয়ার্ড আলি মাসকাবাওয়াই লেবাননের এক নম্বর গোলগেটার। আনোয়ার আলি এবং তাঁর সঙ্গীদের আলাদা নজর রাখতে হবে আলির উপর।

ভারতের কোচ ইগর স্টিমাক বৃহস্পতিবার তাঁর টিমের ছেলেদের ছুটি দিয়েছিলেন। আনোয়ার আলি, রহিম আলি, সাহাল আব্দুল সামাদরা বকরি ঈদ উপলক্ষ্যে বেঙ্গালুরু শহরে ঘুরে বেরিয়েছেন। আর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী সোনমকে নিয়ে সুনীল ছেত্রী গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুতে তাঁর নিজের বাড়িতে। শুক্রবার সবাই আবার টুর্নামেন্টের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন। সুনীল তাঁর ফুটবল জীবনের শেষ বেলায় রয়েছেন দুরন্ত ফর্মে। ইতিমধ্যেই পাঁচটা গোল হয়ে গেছে তাঁর। গোল্ডেন বুট পাওয়াটা যেন সময়ের অপেক্ষা। লেবাননের বিরুদ্ধে আন্তঃ মহাদেশীয় কাপের ফাইনালে সুনীলের গোল ছিল। শনিবারের সেমিফাইনালে তাঁকে রোখার চেষ্টা করবেন লেবাননের সেন্টার ব্যাক ম্যাক্সিম আওন। দুজনের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কে জেতেন সেটাই এখন দেখার।

সুনীলের সঙ্গে আছেন ভারতের তিন তরুণ তুর্কী। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপা এবং দুই উইঙ্গার নাওরম মহেশ সিং এবং ছাংতে। অনিরুদ্ধ মাঠ জুড়ে খেলেন। ফ্রি কিক এবং কর্নার কিকগুলো তিনিই নেন। এবং এ সব থেকে গোলও হয়। আর লেফট উইং মহেশ আর রাইট উইং ছাংতে ভারতের বিরাট ভরসা। দুজনেই এখন গোলের মধ্যে আছেন। এদের সঙ্গে যদি ফরোয়ার্ড সাহাল আব্দুল সামাদ এবং আশিক কুরুনিয়নরা নিজেদের মেলে ধরতে পারেন তাহলে ম্যাচ জেতা নিয়ে ভারতের সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ভারতের কোচ ইগর স্টিমাক এই ম্যাচে ডাগ আউটে বসতে পারবেন না। দলের কোচের দায়িত্বে মহেশ গাউলি। তবে স্টিমাকের অভাব সেভাবে অনুভূত হবে বলে মনে হয় না। কদিন আগেই নেপাল ম্যাচে স্টিমাক ডাগ আউটে ছিলেন না। ভালভাবেই কাজ চালিয়েছেন মহেশ। তাই সুনীল ছেত্রীদের ম্যাচ জিততে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। সব মিলিয়ে তারাই এই ম্যাচে ফেভারিট।  

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: