গোদী মিডিয়া’র সমস্ত হিসাব নিকেশ পাল্টে দিয়ে মহারাষ্ট্রে বিজেপি নয় , শিবসেনার কাঁধে ভর দিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি জোট সরকার । কিন্ত সাধারন স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে মোদী-অমিত শাহের প্রতি তাদের কোনো আস্থা নেই । বরং মারাঠীদের দল শিবসেনার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে সাধারন মানুষ। এমনকি আরএসএসের সদর কার্যালয় যেখানে সেখানেও বিজেপি দল হেরে গেছে । গোদী মিডিয়া বলেছিল মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে । কিন্ত কংগ্রেস নেতাদের নয় , মানুষের সমর্থন নিয়ে ফের এই রাজ্যে কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়িয়েছে । আসাদউদ্দিনের মিম ভোট না কাটলে হয়তো এবার এনসিপি ও কংগ্রেস জোট মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা দখল করে নিত ।
কিন্তু বিজেপি-শিবসেনা জোট  সরকারের রাশ কার হাতে থাকবে, বা জোটে কে বেশি শক্তিশালী হবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপ-পাল্টা চাপের খেলা। শিবসেনার একটি খবর, আড়াই বছর তাদের দলের এবং আড়াই বছর বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী— এই ছকের প্রস্তাব দিতে পারে। নিজেদের আসন খোয়ানো, বিরোধীদের শক্তিবৃদ্ধি, এই সব সমীকরণ মাথায় রেখে শিবসেনার সেই প্রস্তাব বিজেপি সহজে ফেলতে পাবরে না বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। এর মধ্যে আবার এমন জল্পনাও ছড়ায় যে, শরদ পওয়ারের এনসিপির সঙ্গে জোটে যেতে পারে শিবসেনা। তবে সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে দলের নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ‘‘বিজেপি-শিবসেনা জোটের সরকারই হচ্ছে। এ নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই।’’
কেন দর বাড়াতে চাইছে শিবসেনা? গণনার প্রবণতায় দেখা যাচ্ছে, বিজেপি-শিবসেনা জোট পেতে পারে ১৬০টির কাছাকাছি আসন। এর মধ্যে বিজেপির ঝুলিতে যেতে পারে ১০০-র আশেপাশে, বাকিটা শিবসেনার। ২০১৪ সালের নির্বাচনে আলাদা ভাবে লড়েছিল বিজেপি এবং শিবসেনা। ২৬০ আসনে প্রার্থী দিয়ে বিজেপি জিতেছিল ১২২। অন্য দিকে সবকটি আসনে (২৮২) প্রার্থী দিয়ে শিবসেনা জিতেছিল ৬৩ আসন। সেই সূত্রেই এ বার ভোটের আগে কম আসনেও সমঝোতায় রাজি হয় শিবসেনা।
কয়েক মাস আগে লোকসভা ভোটে প্রায় সমান সমান আসনে প্রার্থী দিয়ে লড়েছিল বিজেপি এবং শিবসেনা। বিজেপির জয় এসেছিল ২৩টি আসনে। শিবসেনা পেয়েছিল ১৮টি আসন। আগের বারের বিধানসভা নির্বাচন এবং লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে এ বার বিধানসভা ভোটের আগে ছোট শরিক হিসেবেই কম আসনে প্রার্থী দেওয়ার শর্তে জোটে রাজি হয় উদ্ধব ঠাকরের দল।
কিন্তু এ বারের ফলে দেখা যাচ্ছে আসন কমছে বিজেপির। কিন্তু শিবসেনা কার্যত তাঁদের আসন ধরে রাখতে পেরেছে। আবার বিজেপি দাবিদাওয়া না মানলে কংগ্রেস-শিবসেনা জোটে সামিল হওয়ার জল্পনাও রয়েছে। ফলে এক দিকে নিজেদের গড় ধরে রাখা, বিজেপির শক্তিক্ষয় এবং বিরোধী শিবিরে সামিল হলে বিজেপির ক্ষমতা হারানোর সম্ভাবনা— এই তিন সমীকরণেই বিজেপির সঙ্গে দর কষাকষিতে শক্তি বাড়াচ্ছেন শিবসেনা নেতৃত্ব।
বিরোধী শিবিরকেও অবশ্য হতাশ করেননি ভোটাররা। আগের বারের তুলনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে এনসিপি-র আসন সংখ্যা। গত বার শরদ পওয়ারের দলের হাতে ছিল ৪১ আসন। এ বার তা বেড়ে হচ্ছে ৫৫-র আশেপাশে। কংগ্রেসও তাদের আসন ধরে রাখছে। দু’-একটি আসন বাড়তেও পারে। অর্থাৎ নিজেদের গড় অটুট রেখেও বিজেপি-শিবসেনার জোটে ভাঙন ধরাতে পেরেছে বিরোধীরা। পাশপাশি এটাও মাথায় রাখতে হবে, ২০১৪ সালে বিজেপি-শিবসেনা আলাদা লড়েছিল। এ বার সেখানে জোট বেঁধে লড়েছে। তার পরেও আসন বাড়ানো বিরোধী জোটের কাছে ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ দিচ্ছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
আর এদিকে , শারদ পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে অন্য পথে তিনিও হাঁটতে পারেন । এমনকি শিবসেনার কেউ মুখ্যমন্ত্রী হতে চাইলে তাঁকে সমর্থন দিতে পারে এনসিপি বলে গোপন সূত্রে খবর পাওয়া গেছে । বিশেষ করে শারদ পাওয়ারের মত নেতাকে ইডি দিয়ে যেভাবে হুমকি দেখানো হয়েছে তাতে মহারাষ্ট্রের এই বুড়ো রাজনীতিবিদ শেষ পর্যন্ত এমন খেলা খেলতে পারে যাতে বিজেপি দলের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্নকে ধুলিসাৎ করে দিতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে ।


మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: