বোলারদের ব্যাটিং দেখতে সব সময়ই মজা লাগে। স্পেলালিস্ট ব্যাটসম্যানদের নিঁখুত টেকনিক, চোখ জড়ানো শট, ব্যাট নিয়ে অসাধারণ দক্ষতা দেখার পর যখন বোলাররা টেলেন্ডার হিসেবে কোনওমতে বলে ঠেকিয়ে দলকে বাঁচান তা সব সময়ই উপভোগ্য। শেষের দিকে দলের হয়ে ব্যাট করতে নেমে স্পেসালিস্ট বোলাররা অনেক সময়ই বিপক্ষের বাড়া ভাতে ছাই দিয়েছেন।  তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আট নম্বরের পরে কোনও দলেরই ইনিংস খুব বেশি দূর এগোয় না। তবে ব্যতিক্রমও আছে।

আজ দেখে দেখে নেবো টেস্ট ক্রিকেটের দীর্ঘ ইতিহাসে বিশ্বের মাত্র যে চারজন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করেছেন তাদের নাম। সঙ্গে বলে দেওয়া যাক, টেস্টে এখনও পর্যন্ত কোনও ক্রিকেটার এগারো নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি করতে পারেননি।  

ওয়াল্টার রিড (ইংল্যান্ড, ১৮৮৪ সাল): ওভালে অ্যাসেজ সিরিজের ম্যাচে ওয়াল্টার রিড দশ নম্বরে নেমে এমন এক ইনিংস খেলে দিয়েছিলেন যাকে টেলেন্ডারদের করা ব্যাটিংয়ে আজও সেরা নিদর্শন হিসেবে ধরা হয়। তিনি ১১৭ রানের ইনিংস খেলে দলের নিশ্চিত হার বাঁচান।

রেগিনাল্ড ডুফ (অস্ট্রেলিয়া,১৯০২ সালে): অভিষেক টেস্টে ১০ নম্বরে ব্যাট করে সেঞ্চুরি করা প্রথম ক্রিকেটার ছিলেন রেগি ডাফ, ১৯০২ সালে। ১০৪ রান করেন তিনি।

প্যাট সিমকক্স (দক্ষিণ আফ্রিকা, ১৯৯৮ সাল): বিষ্ময় স্পিনার হিসেবে সেই সময় অপরাজেয় দক্ষিণ আফ্রিকান দলে এসেছিলেন। হ্যান্সি ক্রোনিয়ের দলের স্পিন আক্রমণের সবেধন নীলমণি ছিলেন। সেই প্যাট সিমকক্স ১৯৯৮ সালে জোহানেসবার্গের নিউ ওয়ান্ডার্স টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দশ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরি করতে চমকে দিয়েছিলেন। দলের ৮ উইকেটে ১৬৬ রান পড়ে যাওয়ার পর মার্ক বাউচারকে সঙ্গ দিতে নেমেছিলেন সিমকক্স। পাকিস্তানের ওপেনার তখন প্যাড পরে নামার নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেখান থেকে বাউচারকে সঙ্গ দিয়ে সিমকক্স করেন ১৫৭ বলে ১০৮ রান। শোয়েব আখতার, ওয়াকার ইউনিসকে খুব ধোলাই করেন সিমকক্স। নবম উইকেটে বাউচার-সিমকক্স ১৯৫ রানের রেকর্ড পার্টনারিশিপ গড়েছিলেন।


আবুল হাসান (বাংলাদেশ, ২০১২ সাল): টেস্ট ক্রিকেটের ১০০ বছরেরও বেশি ইতিহাসে তিনি দশ নম্বরে ব্যাট করে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করা এখনও পর্যন্ত দ্বিতীয় ক্রিকেটার। অভিষেক টেস্টে খেলতে নেমে দশ নম্বরে ব্যাট করে সেঞ্চুরি করেছিলেন বাংলাদেশের পেসার আবুল হাসান। ২০১২ সালের নভেম্বরে খুলনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসে আবুল করেছিলেন ১২৩ বলে ১১৩ রান। ৮ উইকেটে ১৯৩ রান থেকে ব্যাট করতে নেমেছিলেন আবুল। 

তিনি সবার শেষে আউট হন। তখন বাংলাদেশের স্কোর হয় ৩৮৭। নবম উইকেটে মেহমদুল্লা-আবুল হাসান যোগ করেছিলেন ১৮৪ রান। অবাক করা কথা হল আবুল বল হাতে সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ঠিক ১১৩ রান দিয়েছিলেন। গোটা ম্যাচে কোনও উইকেট পাননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেই টেস্টে জিতেছিল ১০ উইকেটে। পুরো কেরিয়ার আবুল মাত্র তিনটি টেস্ট খেলেছিলেন। মাত্র তিনটে উইকেট পান গোটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ার। অথচ স্পেশালিস্ট বোলার হিসেবে খেলা আবুলের টেস্ট সেঞ্চুরি আছে। সত্যি অবাক করা ক্রিকেটার।  

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: