ব্রিটিশ শাসনের আগে ভারতকে গোটা বিশ্ব চিনত না৷ এই ধরনের একটি মন্তব্য করেছেন বলিউডের অভিনেতা সইফ আলি খান৷ তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক চরমে পৌঁছেছে৷ বিজেপির তরফে আক্রমণ শানানো হচ্ছে সইফকে৷
আরও পড়ুন: অর্জুনের ব্রহ্মাস্ত্রই কি ভবিষ্যতের পরমাণু বোমা!
এই প্রেক্ষাপটেই বাঙালি যুবক চয়ন মুখোপাধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে ব্রিটিশ শাসনের পূর্বের ভারতীয়ত্ব নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন৷ 
সেই লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হল৷
ভারতীয়রা যে একই নেশনের অন্তর্গত, সেই ধারণা ব্রিটিশ আসার আগে ছিল না, এইটা একদমই সত্যি।
আমাদের স্কুল কলেজে যে অজস্র ভুলভাল জিনিস পড়ানো হয় , তার মধ্যে একটা হলো “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য”! নেহরুভিয়ান ন্যাকামি না করে, ধানাইপানাই ছেড়ে সোজা কথায় আসুন!ঐক্য, ভারতীয় হিসেবে ঐক্য, আমাদের মধ্যে কোনোদিনই ছিল না!
পলাশীর যুদ্ধ যখন চলছে তার থেকে কিছু দূরেই কয়েকজন কৃষক মাঠে চাষ করছিলেন। যুদ্ধে জেতার পরে ক্লাইভ নিজেই বলে গেছেন, মুর্শিদাবাদ শহরে ঢোকার সময় তারা যতজন বাসিন্দা দেখেছিলেন, তারা প্রত্যেকে একটা করে ঢিল হাতে নিয়ে রুখে দাঁড়ালেও তারা তছনছ হয়ে যেতেন।
আরো উদাহরণ দেবো?
উত্তরে মামুদ যখন সোমনাথ সহ একের পর এক মন্দির তছনছ করে দিচ্ছেন, দক্ষিণে সেই একই সময় রাজেন্দ্র চোল আরবদের পিটিয়ে সিধে করে দিচ্ছেন। শাহী রাজা আনন্দপাল মামুদের বিরুদ্ধে হিন্দু রাজাদের জোট তৈরি করেছিলেন।রাজেন্দ্র চোলকেও তিনি জোটে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানালে রাজেন্দ্র চোলের উত্তর আসে, আগে আনন্দপালকে রাজেন্দ্র চোলের বশ্যতা স্বীকার করে নিতে হবে!
আনন্দপাল স্বীকার করেননি। সোমনাথ বাঁচেনি!
রাণা সংগ্রাম সিংহ অনেকের কাছেই আইকন। কিন্তু সত্যিটা হলো, বাবরকে এদেশে আমন্ত্রণ করে লোদী বংশ উচ্ছেদ করায় প্রথমে তারও উৎসাহের অবধি ছিল না, দৌলত খান লোদীর মতোই! খাল কেটে কুমির আনার পরিণতি কী হতে পারে তিনি জানতেন না, বাবর লুঠপাট করতে নয়, পাকাপাকিভাবে এদেশে থাকতে আসছেন এইটা তিনি যখন বুঝলেন, অনেক দেরি হয়ে গেছে!
শিবাজির বিরুদ্ধে আওরঙ্গজেবের কোন সেনাপতি বিজয়লাভ করেছিলেন? রাজপুত রাজা জয়সিংহ।পরে আওরঙ্গজেব যাকে বিষপ্রয়োগ করে হত্যা করেন। আওরঙ্গজেবের আরেক সেনাপতি কে যিনি দারাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও পরে পিছিয়ে যান এবং জীবনভর আওরঙ্গজেবের গোলামি করে শেষে আওরঙ্গজেবেরই চক্রান্তে বিষপ্রয়োগের ফলে মারা যান? যশবন্ত সিংহ!
জাঠবীর চূড়ামনের বিরুদ্ধে মোগলদের সেনাপতি কে ছিলেন? সেই জয় সিংহের নাতি!
আরো গাদা গাদা উদাহরণ আছে!
ভারতীয়রা একটি নেশন, সেই ধারণা ব্রিটিশ আসার আগে ছিল না।
কিন্তু সাইফ আলি খান blunder করেছেন ভারত ধারণা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে। “ভারত” ধারণাটি বহু প্রাচীন, গাদা গাদা রেফারেন্স দিয়ে দেওয়া যায়, ইতিমধ্যেই অনেকে দিয়েছেন, আমি রিপিট করবো না । “ভারত” ধারণা ব্রিটিশ আসার আগে ছিল না, এটি আদ্যন্ত মিথ্যা।
দোষ তো আমাদেরই। আমরা ভারতীয়রা, বুদ্ধিজীবী বলতে বুঝি সিনেমা স্টার, লেখক, কবি – এদের, যারা কোনো কাজে কম্মে লাগে না! অথবা ঐতিহাসিক, সমালোচক, নাট্যব্যক্তিত্ব – এদের! কাদের বোঝা উচিত ছিল? বিজ্ঞানী – গবেষক, অর্থনীতিবিদ – এদের। যেমন দেশ, তার তেমন বুদ্ধিজীবী, তেমনই তার পড়াশোনা, তেমনি তার বচন।

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: