সত্যজিতের ছবির যে কোনও একটা দৃশ্য, একটা ছোটখাটো মুহূর্ত নিয়েই একটা গোটা নিবন্ধ লিখে ফেলা যায়, এমনটাই মনে করতেন ইংরেজ চলচ্চিত্র সমালোচক রবিন উড।
হ্যাঁ, আজ বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়েয় মৃত্যুদিন। ১৯৯২ সালেই ২৩ এপ্রিল অর্থাৎ আজকের দিনেই বাঙালিকে কাঁদিয়ে তাঁর পার্থিব শরীর বিদায় নিয়েছিল। ১০০, গড়পার রোডের বাড়িতে মানুষ সত্যজিৎ হয়তো আজ আর নেই, কিন্তু তাঁর কাজ রয়েছে মানুষের হৃদয়ে। তাই তো লেজিয়ঁ দ্য নর সম্মানে সম্মানিত এই বাঙালির জন্যই হীরকরাজাকে খানখান করার স্বপ্ন দেখতে পারে উদয়ন পণ্ডিতরা। অরিন্দমরা টেবিল চাপড়ে বলতে পারে, " আই উইল গো টু দ্য টপ, দ্য টপ, দ্য টপ!"
ছবিতে কিছু প্রতিষ্ঠিত মুখের পাশাপাশি বেশির ভাগ সময় কিন্তু তিনি তুলে এনেছেন নতুন নতুন মুখ। বলা যেতে পারে সে সময়ের বাংলা ছবিতে অভিনেতাদের 'কারখানা' নির্মাণ করেছিলেন তিনি। ছবি শুরুর আগে কল্পনায় তিনি চরিত্রদের দেখতে পেতেন। চরিত্রদের স্কেচ করা থাকত তাঁর খাতায়। তার পর চলত সন্ধান। প্রায়শই পেয়ে যেতেন অন্বিষ্ট মুখ। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেলে অবাক হয়ে সবাই দেখত সেই সব অভিনেতার অসাধারণ কাজ। এখানেই তো সত্যজিতের জাদু।
যে সময়ে দাঁড়িয়ে সত্যজিৎ রায় কাজ করেছেন, সেই সময়টা অন্য রকম ছিল। খুঁতখুঁতেপনা ছাড়া, দূরদৃষ্টি ছাড়া ছবি বানানো ছিল অসম্ভব। হাল সময়ের এত বৈভব ছিল না সে কালে। 'স্কোপ অব এররস'-এর কোনও জায়গা ছিল না সেই সময়ের কলাকৌশলে। প্রোডাকশন- বাজেট- টেকনোলজি, কোনও দিক থেকেই নয়। সীমিত সাধ্যে, সংস্থানে ছবি বানাতে হত। আর সেই কারণেই, ওঁর মত ‘ভিসনারি’ একজন মানুষকে প্রায় সব দায়িত্ব পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে তুলে নিতে হয়েছিল নিজের কাঁধে। গল্প লিখেছেন, চিত্রনাট্য রচনা করেছেন, সংলাপ লিখেছেন, সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন, গান লিখেছেন, এমনকি পোস্টার ডিজাইন ও স্টোরিবোর্ডিং পর্যন্ত করেছেন নিজে হাতে। এর সঙ্গে কাস্টিং করেছেন, পোশাক পরিকল্পনা করেছেন এবং সর্বোপরি পরিচালনা করেছেন।
তাই সত্যজিৎ রায় একজনই হন....
click and follow Indiaherald WhatsApp channel