কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচন শেষ হল টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে। জয়ী হলো কালিয়াগঞ্জ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তপন  দেব সিংহ।গত লোকসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জে তৃণমূলের শোচনীয় পরাজয়ের পর অনেকটাই ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে কালিয়াগঞ্জ তৃণমূল কংগ্রেস।শহর এবং গ্রামের সব জায়গায় তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভা নির্বাচনের চেয়ে কয়েকশো গুণ ভালো ফলাফল করেছে। আর তার ফলস্বরূপ উপনির্বাচনের ট্রফি নিজেদের ঘরে আনতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সামনে এবার আসছে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন।

 আছে মাত্র কয়েকটা মাস সময় হাতে।এখন থেকেই তাই মরিয়া কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল নেতৃত্ব পৌরসভা দখল কিভাবে তাদের থাকবে সে ব্যাপারে চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে। সঙ্গে রয়েছে তাদের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের টিম। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায় এবার কালিয়াগঞ্জ পুরসভার নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক কাউন্সিলার টিকিট নাও পেতে পারেন। বিশ্বস্ত সূত্রেএই খবর পাওয়া গিয়েছে। এনিয়ে শহরজুড়ে চর্চা চলছে। ভোটগুরু পিকের টিমের পরামর্শে জেলা নেতৃত্ব একাধিক আসনে প্রার্থী পরিবর্তন করতে পারে। এতে একদিকে যেমন অনেক জয়ী কাউন্সিলারের এলাকা বদল হতে পারে, তেমনি কয়েকজন টিকিট নাও পেতে পারেন।যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব ওয়ার্ড ধরে ধরে জয়ের ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করতে নেমেছে। কাউন্সিলারদের সর্ম্পকে দল বিস্তারিত রিপোর্ট জোগাড় করছে। লোকসভা ভোটে পুরসভা এলাকায় দলের ভরাডুবির পরে বিধানসভার উপনির্বাচনের কালিয়াগঞ্জ শহরে ভালো ফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে তার মধ্যেও তাদের চিন্তায় রেখেছে শহরের ৬ টি  ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে থাকায়। জানা যায় পুরসভার জন্য রাজ্য নেতৃত্ব এখন থেকেই পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে শুরু করে দিয়েছে । তারাই প্রার্থী নির্বাচন করবে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি যাঁদের আছে তাঁদেরকেই টিকিট দেওয়া হবে।বর্তমানে কালিয়াগঞ্জ পুরসভা তৃণমূলের দখলে রয়েছে। ১৭ টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট এই পুরসভায় গত নির্বাচনে ১৫ টি  কংগ্রেস এবং ১  সিপিএম ও ১ টিতে বিজেপি জয়লাভ করেছিল।পরবর্তীতে কালিয়াগঞ্জ এর উপর দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। পালাবদল হয়েছে রাজনৈতিক দলের কাউন্সিলরদের। ফলে সেই সময় কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা কংগ্রেস দখল করলেও পরবর্তীতে কংগ্রেসের  ১৩ জন কমিশনার ও বিজেপির একজন কমিশনার দলবদল করে তৃণমূল কংগ্রেসের যাওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা দখল করে। যে পৌরসভার পৌরপতি হন কার্তিক চন্দ্র পাল। এরপর শুরু হয় এখানে উন্নয়নমূলক কাজ। রাস্তাঘাট যেমন হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়, তেমনি ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত মানের হচ্ছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে বিনোদন পার্ক, স্টেডিয়াম, বাস স্ট্যান্ড সহ আরো বেশ কিছু উন্নয়ন। তবুও গত লোকসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে হারতে হয়েছে কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেসকে।এরপর ছয় মাসের মধ্যে আবারও নির্বাচন এখানে হয় কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচন।সেখানে অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভা চেয়ে কয়েক শ গুণ ভালো রেজাল্ট করে।তবুও বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে থাকায় তৃণমূলের কাছে একটু হলেও চিন্তার কারণ বেড়ে গিয়েছে।আর তাই পৌরসভা আগামীতে তৃণমূল কংগ্রেস ধরে রাখতে এখন থেকেই ব্লু প্রিন্ট তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে দলীয় নেতৃত্ব।  বিজেপিকে রুখতেই নতুন দাওয়াই খুঁজছে শাসক দল। তৃণমূল দল সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় সম্প্রতি রাজ্য নেতৃত্ব পুরভোট নিয়ে আলোচনা করে। সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে মতামত চায় দল। চেয়ারম্যান সহ জেলা নেতৃত্বর কাছে বিস্তারিতভাবে সেখানে জানতে চাওয়া হয়।  নেতৃত্বের কাছে সর্বশেষ পরিস্থিতি জানার পরেই পুরবোর্ড জেতার রণকৌশল তৈরি করতে রাজ্য নেতৃত্ব মন দেয়। প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য আলাদা আলাদা রণকৌশল বানানো হচ্ছে। প্রত্যেক কাউন্সিলার সর্ম্পকে বিস্তারিতভাবে খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে রাজ্য নেতৃত্ব। কারা কারা ঠিকাদারির ব্যবসায় জড়িত সেবিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। স্বজনপোষণ, কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কেও খোঁজখবর চলছে।এদিকে দিদিকে বলো কর্মসূচির মাধ্যমে একাধিক কাউন্সিলার, নেতার বিরুদ্ধে কলকাতায় অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই সব তথ্য জমা পড়ায় পর সবটা দল খতিয়ে দেখবে। ইতিমধ্যেই কিছু রিপোর্ট জমাও পড়েছে। তা থেকেই কাটছাঁট শুরু হচ্ছে।দল জানিয়েছে, শহরে গ্রহণযোগ্য মুখকেই প্রার্থী করার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। স্বচ্ছভাবমূর্তির ব্যক্তিদের সামনে রেখে দল পুর মসনদে বসতে চায়। সেক্ষেত্রে স্বচ্ছ, শিক্ষিত প্রার্থীর খোঁজ চলছে।

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి:

pk