কোয়েল মনে করেন কলকাতা এত প্রাণোচ্ছ্বল! ওই যে রকের আড্ডা বা এখন ভাঁড়ের চা হাতে নানা বিষয়ে আড্ডা, এটা কলকাতাতেই সম্ভব! মিউজিক থেকে ফুটবল, কিছুই বাদ যায় না সেখানে।

তাঁর কথায়, ছোট বয়সে খুব শুনতাম লাস ভেগাসের কথা। বড় হয়ে যখন গেলাম মনে হল কলকাতার দুর্গাপুজোর কাছে তো তা কিছুই নয়। জায়গাটা সুন্দর। কিন্তু কোনও প্রাণ নেই। এই যে পাঁচটা দিনের আলাদা কেনাকেটা, এটা অন্য কোথাও ভাবা যায়? পুজোর আগে কুমোরটুলি ভিজিট মাস্ট। পশ্চিমবঙ্গে যে রকম আর্টিস্ট আছে আমার মনে হয় না আর কোথাও আছে। এত রকমের ভাবনা শিল্প! কলকাতায় কিছু একটা হল, হয়তো একটা ফ্যাশন শো, সেখানে সব ধারার মানুষই চলে যাবে। এত আন্তরিকতা আছে এই শহরের। সব সংস্কৃতির আদানপ্রদানের ক্ষেত্র এই শহর।

আমার মনে আছে ক্লাস ওয়ানে বাবার সঙ্গে প্রথম আমেরিকা যাই। তারপর থেকে বিদেশের শহর ঘোরা তো চলেইছে। পরবর্তীকালে শুটিংয়ে বা আমি আর রানেও প্যারিস, ইতালি, সুইৎজারল্যান্ড সমেত বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছি। প্রত্যেকটা জায়গাই খুব সুন্দর। কিন্তু যেখানেই যাই না কেন, কিছু দিন থাকার পর মনে হয় কখন কলকাতায় ফিরব?

কলকাতা একমাত্র জায়গা যেখানে পিকনিক ফিলিংটা সবচেয়ে বেশি আছে। ব্যাগে স্যান্ডুউইচ, কমলালেবু সঙ্গে গান— শীতে কলকাতার পিকনিক জমে ওঠে। এখানে বেলুড় মঠও আছে, আবার বো ব্যারাকও আছে। কলকাতামাদার টেরিজারও, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুরও।মাইকেল মধুসূদন থেকে রবীন্দ্রনাথ, সকলেই এই কলকাতার মাটিতে জন্ম নিয়েছেন। সব মানুষ নিজের মতো জায়গা করে নিতে পেরেছে এই কলকাতায়।

 

কলকাতার পরিসর এত বড় যে এই শহর মানুষকে তৃপ্তি দিয়েছে। নিজের মানুষকে অল্পে খুশি থাকতে, সুখী থাকতে শিখিয়ে দেয় শহর। এটা কিন্তু সব শহরে হয় না।
আর কলকাতা নিয়ে যখন লিখছি, রানের কথা বলতেই হবে আমায়। কোথাও হয়তো বেড়াতে গিয়েছি আমরা। ফেরার কথা কুড়ি তারিখ। রানে বলল, ‘‘আর কলকাতা ছেড়ে ভাল লাগছে না থাকতে। চল ফিরে যাই...’’,এতটাই কলকাতাকে ভালবাসে ও। আর কলকাতাকে ও আমার মতোই ভালবাসে বলে বোধ হয় আমাদের বন্ধুত্ব, প্রেম এত গাঢ় হয়েছে।
এই শহর জানে আমার প্রথম সব কিছু। সুমনের এই গান আমার আর রানের জীবনেও সত্যি। আমাদের জন্ম থেকে বিয়ে, সব এই শহরেই।

 

 

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: