২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে দিল্লির জাতীয় কুচকাওয়াজের এবার বাংলার কোনো ট্যাবলো থাকবে না । প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্যাবলোর জন্য রাজ্য সরকারগুলির পাঠানো প্রস্তাব খতিয়ে দেখে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সংশ্লিষ্ট বাছাই কমিটি। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার নবান্ন থেকে ট্যাবলো পাঠানোর প্রস্তাব গিয়েছিল তিনটি বিষয়ের উপর—কন্যাশ্রী, সবুজশ্রী এবং জল ধরো জল ভরো। এই প্রস্তাব পাঠানোর পর একাধিক বার কেন্দ্রের বাছাই কমিটি রাজ্যগুলিকে ডেকে পাঠায়। বিষয়বস্তুর খুঁটিনাটি এবং উপস্থাপনা কেমন হবে, সে বিষয়ে জানতে চায়।
নয়াদিল্লি সূত্রে খবর, রাজ্যের ট্যাবলোর বিষয়বস্তু নিয়ে তেমন আগ্রহ দেখাননি বাছাই কমিটির সদস্যরা। সেই কারণে প্রস্তাব জমা পড়ার পর দু’বার রাজ্য সরকারগুলিকে নিয়ে বাছাই কমিটি বৈঠক করলেও তাতে ডাক পাননি পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিরা। ফলে এ বছর প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজ্যের ট্যাবলো রাজধানীর রাজপথে না থাকার সম্ভাবনাই প্রবল। অনেক সময় শেষ মুহূর্তে ডেকে নেওয়ার নজির থাকলেও এ বার তেমন আশা নেই বলেই ধরে নিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলোকে জাতীয় কুচকাওয়াজের অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে তীব্র সমালোচনা করেছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্র তথা নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে অভিযোগ তুললেন রাজ্য মন্ত্রিসভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এই ঘটনাকে তিনি ‘নগ্ন প্রতিহিংসা’ বলে মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে এটাকে ‘শিশুসুলভ আচরণ’ বলেও মনে করেন তিনি।
আসলে কয়েক দিন ধরে সিএএ আইন ও এনআরসি ইস্যুতে রাজ্য সরকার কড়া অবস্থান নেওয়ার পরেই প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজ্যের ট্যাবলোকে অনুমতি দিতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তে রাজনীতি গন্ধ পাচ্ছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ।
এই প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে ভাবে বাংলার ট্যাবলো বাদ দেওয়া হল, সেটা অত্যন্ত নগ্ন প্রতিহিংসা। শুধুমাত্র বিমাতৃসুলভ আচরণ বা রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব নয়। এটা খুব শিশুসুলভ আচরণ। প্রজাতন্ত্র দিবসে বাংলার ট্যাবলো একাধিক বার প্রথম পুরস্কার পেয়েছে। সেই রাজ্যের ট্যাবলো প্রত্যাখ্যান করাটা কোন ধরনের সৌজন্য জানি না।’’
এই ধরনের ঘটনায় গণতান্ত্রিক তথা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভিত নষ্ট হয় বলেও মত সুব্রতবাবুর। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দেশের যে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোটা রয়েছে, এই সব ঘটনায় সেই কাঠামোর সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। রাজনৈতিক ভাবে যে হেতু আমাদের সহ্য করতে পারে না, সে হেতু এই ভাবে প্রতিশোধ নিতে চাইছে। রাজনীতি আর সরকারকে গুলিয়ে ফেলছে। তবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হিসেবেও এটা খুব একটা পরিণত নয়। খুব শিশুসুলভ আচরণ।’’
click and follow Indiaherald WhatsApp channel