সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। আমরা সবাই জানি তিনি ভারতে দু’টি দলের কর্ণধার। একটি ক্রিকেট (লখনউ সুপার জায়ান্টস) এবং অপরটি ফুটবল (মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস)। তবে যেটা জানি না, সেটা হচ্ছে এই দলগুলির সঙ্গে কতটা আবেগ দিয়ে জড়িত তিনি। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক প্রবৃত্তি নেই। নিছক একজন সাধারণ ইনভেস্টর নন, তিনি একজন টিমম্যানও। যখনই দল সমস্যায় থাকে, তিনিও সমস্যায় থাকেন। খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন সমাধানের রাস্তা। রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্টসের কর্ণধার থাকার সময়েও এই একই জিনিস লক্ষ্য করা গিয়েছে তাঁর মধ্যে। টিম হারছে দেখে অধিনায়ক ধোনিকে গিয়ে বলেন, ‘জাম্পাকে কেন খেলাচ্ছো না? ওকে খেলাও।’ পরে জাম্পাকে খেলিয়েওছিলেন মাহি। আর সেটার সুফলও পেয়েছিলেন। ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস মুহূর্তে লকেট হাতে নিয়ে জপ করতেও দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকবার। টিমের জয় মানে তাঁরও জয়, টিম হারছে মানে তিনিও তলানিতে।

মঙ্গলবারের কলকাতা বৃষ্টিস্নাত। ২/৪ জাজেস কোর্ট রোডে এসবিআই ব্যাঙ্কের ঠিক পাশেই আরপিএসজি কর্পোরেট অফিস। সেখানেই ভিন্ন মেজাজে ধরা দিলেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টসের কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। একপাশে বসালেন অনিরুদ্ধ থাপাকে এবং অপরদিকে বসালেন জেসন কমিন্সকে। মধ্যমণি অবশ্যই স্থির-দৃঢ় এবং আত্মবিশ্বাসী গোয়েঙ্কা। মোহনবাগানের নতুন জার্সি উন্মোচনের দিনও দিলেন একটা মাস্টারস্ট্রোক। বললেন, ‘এই নতুন জার্সির নকসা একজন মোহনবাগান সমর্থক করেছেন। ৫০০০ জন জার্সির নকসা জমা দিয়েছিলেন। তারমধ্যেই একটি বেছে নেওয়া হয়েছে।’

কী বুঝলেন? এরমধ্য দিয়ে কিন্তু একটা বার্তাও দিতে চাইলেন। অতীতে ‘এটিকে মোহনবাগান’-এই নাম নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। সমর্থকদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে। দলের নাম বদলের সঙ্গে জার্সির নকসা একজন বাগান সমর্থকদের দিয়ে করিয়ে যেন এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন।

আইএসএল, ডুরান্ড কাপের সঙ্গে এএফসি কাপেও খেলবে মোহনবাগান। কর্ণধার এবং টিমম্যান গোয়েঙ্কা সেই সব প্রতিযোগিতায় সাফল্য চান। তিনি মনে করেন, মোহনবাগানের যে গৌরবের ইতিহাস রয়েছে সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সাফল্য প্রয়োজন। সেই কারণেই অনিরুদ্ধ, কমিন্সের মতো ফুটবলারদের সই করানোর জন্য ঝাঁপিয়েছে সবুজ-মেরুন। শুধু প্রথম একাদশ নয়, রিজার্ভ বেঞ্চকেও শক্তিশালী করার  লক্ষ্য ছিল গোয়েঙ্কার। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি এই মুহূর্তে সব থেকে শক্তিশালী দল মোহনবাগানের। দলে খুব ভাল মিডফিল্ডার এবং স্ট্রাইকার রয়েছেন। দলে ভাল গোলরক্ষক রয়েছেন। আশা করব মাঠে নেমে তাঁরা দল হিসেবে নিজেদের উজাড় করে দিতে পারবে।'

ফুটবল মরশুম তো সবে শুরু। যতবার মোহনবাগান জিতবে, সঞ্জীব গোয়েঙ্কার হৃদয় আন্দোলিত হবে, নতুন জয়ের আনন্দে আবারও ঝাঁপাবেন। প্রিয় দলের হারে আবার হৃদয় বিদীর্ণও হবে। বড় টুর্নামেন্ট বা লিগ জয়ের মুহূর্তে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে হয়ত সবুজ-মেরুন আবিরে রাঙাও হবেন মিস্টার গোয়েঙ্কা।

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: