একদিকে যেমন বাংলার রাজনৈতিক নজিরবিহীন জনসমাবেশ। তেমনই এই জনসামবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পরের দিনই পর দিন সেই প্রসঙ্গ টেনে মমতার দাবি, এমন কোনও মন্তব্যই তিনি করেননি। উল্টে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্ভোগের জন্য কেন্দ্রের দিকে ফের আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বলেন, “একটি ট্রেনের মধ্যে চাপাচাপি করে যে ভাবে শ্রমিকদের পাঠানো হয়েছে তা অন্যায়। কেন সুস্থ পরিযায়ীদের বিপদের মুখে ফেললেন? আপনিই তো অন্যায় করলেন।” মমতার মতে, কেন্দ্রীয় সরকার “লকডাউনের আগে ৭ দিন ধরে শ্রমিক এক্সপ্রেস চালিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে পারতেন পরিযায়ী শ্রমিকদের। তা হলে এমন অবস্থা হত না। দেখেও তো শিক্ষা নিতে পারেন। এখানে তো কোনও সমস্যা হয়নি। এখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলা থেকে ফিরে যেতে চায়নি। বাংলায় ঘর আছে। থাকার জায়গা আছে।”

 

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা বাংলার মানুষকে পেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে প্রবল তোপ দেগেছিলেন অমিত শাহ। কিন্তু প্রত্যেকটা ইস্যুর শেষে ঘুরেফিরে ঢুকে পড়েছিলেন সেই বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গে, যা এখনও অন্তত ৮-৯ মাস দূরে। কখনও ‘সোনার বাংলা গড়ার’ ডাক, কখনও ‘পরিবর্তনের’ আহ্বান, অমিত শাহের ভাষণে প্রতিধ্বনির মতো বার বার শোনা গেল ২০২১ সালে বাংলার বিজেপির সরকার প্রতিষ্ঠার কথা। আর সেই লক্ষ্যে যে খুব বড় হাতিয়ার হিসেবে তিনি ব্যবহার করতে চলেছেন করোনার জেরে তৈরি তৈরি হওয়া পরিস্থিতিকে, তা বেশ স্পষ্ট হয়ে গেল। লকডাউনের পরে বাংলার জন্য আয়োজিত তাঁর প্রথম কর্মসূচিতে, ভোটের দামামাটা একেবারে খোলাখুলিই বাজিয়ে দিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ভোটের দামামা সজোরে বাজিয়ে দিলেন অমিত শাহ। সঠিক সময়ে হলে পশ্চিমবঙ্গে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন এখনও ৮-৯ মাস দূরে। কিন্তু বাংলার জন্য তাঁর প্রথম ভার্চুয়াল র‌্যালিতে বার বার অমিত শাহ বুঝিয়ে দিলেন— একমাত্র লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গের শাসন ক্ষমতা দখল। ‘পরিবর্তনের লড়াই’, ‘সোনার বাংলা গড়ার লড়াই’, ‘শরণার্থীর সম্মানের লড়াই’— এমন নানা লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করলেন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করতে গিয়ে তাঁর মন্তব্য, সিএএ-র এই বিরোধিতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই রাজনৈতিক শরণার্থী বানিয়ে দেবে। এবং সেই মন্তব্যই মঙ্গলবার ভাষণের মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে ধরা দিল ভার্চুয়াল র‌্যালির শেষে।

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: