সমস্ত শ্রমিকদের লক্ষ্য  দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমানায় আনন্দ বিহার বাস টার্মিনাস। সেখানে হাজার হাজার লোকের জনসমুদ্র। কেও  ফিরবেন ফিরোজাবাদের গ্রামে। অনেকে ফিরবেন উত্তরপ্রদেশের অন্য কোথাও, অনেকে ফিরবেন বিহারে। মাঝে মাঝে বাস আসছে। তার ছাদ থেকে পা-দানি পর্যন্ত ঠাসা ভিড়। ২৪ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’ধারে লম্বা লাইন।

 

কোথায় করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা, কোথায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখায় নিয়ম? সন্ধেবেলাতেও আনন্দ বিহারে প্রায় ব্রিগেড সমাবেশের মতো থিকথিকে ভিড়। যা দেখে গোটা দেশ স্তম্ভিত, আতঙ্কিত।

 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লকডাউন ঘোষণা করার পরদিন থেকেই শ্রমিকদের ঘরে ফেরার মিছিল শুরু হয়েছিল। শুক্রবার অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, ঘরে ফেরানোর বন্দোবস্ত সরকার করবে না। কারণ তাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। যে যেখানেই আছেন, সেখানেই থাকতে হবে। রাজ্যগুলি শ্রমিকদের আশ্রয়-খাবারের বন্দোবস্ত করবে।

 

কেন্দ্রের এই নির্দেশের উল্টো পথে হেঁটে শনিবার সকাল থেকে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার হাজার খানেক রাজ্য পরিবহণের বাস রাস্তায় নামিয়েছে। দিল্লির সীমানা থেকে সেই সব বাসে করেই উত্তরপ্রদেশ-বিহারের শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যোগী সরকারের বক্তব্য, এ ছাড়া উপায় নেই। কারণ, বাস না পেয়ে শ্রমিকরা কয়েকশো কিলোমিটার হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। রাস্তায় খাবার-জল মিলছে না। ক্লান্ত হয়ে হাইওয়ের পাশেই শুয়ে পড়ছেন তাঁরা। পুলিশ নামিয়ে হাজার হাজার শ্রমিকদের রাস্তা আটকানো সম্ভব নয়। প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রণব সেনের আশঙ্কা, এ ভাবে চললে খাদ্যের জন্য দাঙ্গা লেগে যেতে পারে। অতীতে দুর্ভিক্ষের সময় এ দেশে তেমন ঘটেছে।

 

শেষ পর্যন্ত বেগতিক দেখে অমিত শাহ আজ বলেছেন, মোদী সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াবে। কী ভাবে? তাঁর জবাব, স্বরাষ্ট্রসচিব আজ রাজ্যগুলিকে চিঠি লিখে হাইওয়ের ধারে তাঁবু খাটিয়ে ত্রাণশিবির খুলতে বলেছেন। সেখানে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা, প্রয়োজনে কোয়রান্টিন ও হাসপাতালে পাঠানোর বন্দোবস্তও রাখতে হবে। এ জন্য রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল থেকে অর্থ খরচ করতে হবে। কিন্তু তাঁবুতে কী ভাবে শারীরিক দূরত্ব বা কোয়রান্টিনের ব্যবস্থা থাকবে, তার জবাব মেলেনি। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ী জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে সক্রিয় হতে বলেছেন।

 

మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: