ভোজনরসিক, মিষ্টি প্রিয় বাঙ্গালী কাছে অন্যতম পছন্দের ডেস্টিনেশান হতেই পারে লাল মাটির বাঁকুড়া। কারণ রাজ্যের এই জেলায় একমাত্র এখানেই দেখা মিলবে শুধু মাত্র জিলিপির জন্য আস্ত একটা মেলার। বাঁকুড়ার সিমলাপালের পুকুরিয়া গ্রামে রসে টইটম্বুর এই জিলিপির ইতিহাস বহু পুরাণো। 
পুকুরিয়া গ্রাম টি মুলত কর্মকার অধ্যুষিত গ্রাম। তাই গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে বিশ্বকর্মা আর ভাদু পুজায় হলো প্রধান উৎসব। তাই প্রতিবছরেই বিশ্বকর্মা ও ভাদু পূজার দিনই শুরু হয়ে যায় এই ঝিলিপি মেলার। বড় বড় কড়াইয়ে পেল্লায় সাইজের জিলিপি তৈরীতে ব্যস্ত থাকেন কারীগরেরা। এখানকার ঝিলিপি গ্রাম-এলাকা-জেলার গণ্ডী ছাড়িয়ে পৌছে যায় ভিন জেলাতে সহ ভিন রাজ্যে৷ । নিজের বাড়ির জন্য নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অনেকে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে উপহার হিসেবে পাঠান পেল্লায় সাইজের জিলিপি। অভিনব এই জিলিপি মেলায় বিকি-কিনির মাঝে চলে জিলিপি নিয়ে প্রতিযোগীতাও। কার জিলিপি কতো বড় সে নিয়ে তো মেলার ক’দিন বিক্রেতাদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগীতা চলতেই থাকে। মূলত বিরির বেসন, চাল গুঁড়ো, ময়দা দিয়ে তেরী বনস্পতিতে ভাজা এই জিলিপি এক একটির ওজন ন্যুনতম তিন থেকে চার কেজি। আর এই বিশালাকার সুস্বাদু, মুচমুচে জিলিপির টানেই ফি বছর অসংখ্য মানুষ হাজির হয়ে যায় পুকুরিয়ার জিলিপি মেলায়। 
জিলিপি তৈরীর কারীগর আশীষ কর্মকার, সুরথ কর্মকাররা বলেন, বাপ ঠাকুর্দার আমল থেকেই এই জিলিপি করা দেখে আসছি। এতো বড় আকারের জিলিপি জেলার আরও কয়েকটি স্থানেও তৈরী হয়। তারা বলেন, সারা ভাদ্র মাস ধরেই এই জিলিপি তৈরী হয়। নতুন তৈরী হওয়া আত্মীয় বাড়ি থেকে জেলা, রাজ্য, দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও এই জিলিপি পাড়ি দেয় বলে তাদের দাবী। 
পেল্লায় সাইজের জিলিপি বানানোর কারন হিসেবে বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এই বিশালাকার জিলিপি তৈরীর পিছনে কারণ হিসেবে বলেন, এই জিলিপি মূলত ভাদু পুজো উপলক্ষ্যে তৈরী হয়। ভাদুকে থালা ভর্তি মিষ্টি দেওয়াই নিয়ম। কিন্তু নানা রকমের মিষ্টি দিয়ে ভাদুকে নৈবেদ্য দেওয়া সেই সময় খরচ সাপেক্ষ ছিল। তাই একটি থালার আকারে জিলিপি তৈরী করে ভাদুকে নিবেদন করার উদ্দেশ্যেই এতো বড় আকারের জিলিপি তৈরীর পিছনে মূল কারণ। 



మరింత సమాచారం తెలుసుకోండి: